📌প্রথম অধ্যায় – রাসায়নিক বিক্রিয়া এবং সমীকরণ | TBSE Class 10 Science (Bengali Medium) সম্পূর্ণ গাইড part 2  only Answer Set

sirbikramsutradhar SirBikramSutradhar TBSE TBSE Class 10 Science বিজ্ঞান TBSE Class 10 Science বিজ্ঞান

প্রশ্নাবলী  Science  বিজ্ঞান দশম শ্রেণীর বাংলায় সব উত্তরপত্র ( TBSE Class 10 – Chapter 1 – রাসায়নিক বিক্রিয়া ও সমীকরণ) Bengali Medium

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:

(1) ম্যাগনেসিয়াম ফিতাকে বায়ুতে দহনের পূর্বে পরিষ্কার করা হয় কেন?

ম্যাগনেসিয়াম ফিতা বায়ুর অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে তার উপর একটি পাতলা ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড (MgO) স্তর তৈরি করে।
 এই স্তরটি ম্যাগনেসিয়ামের সম্পূর্ণ দহন বাধাগ্রস্ত করে। তাই, এটি হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড বা স্যান্ডপেপার দিয়ে পরিষ্কার করা হয়, যাতে বিশুদ্ধ ম্যাগনেসিয়াম বায়ুর সাথে প্রতিক্রিয়া করে জ্বলতে পারে।

(2) নীচের রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলোর শমিত সমীকরণ লেখ:

(i) হাইড্রোজেন + ক্লোরিন → হাইড্রোজেন ক্লোরাইড

H2+Cl2→2HCl

(ii) বেরিয়াম ক্লোরাইড + অ্যালুমিনিয়াম সালফেট → বেরিয়াম সালফেট + অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড

3BaCl2+Al2(SO4)3→3BaSO4+2AlCl3

(iii) সোডিয়াম + জল → সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড + হাইড্রোজেন

2Na+2H2O→2NaOH+H2

(3) নীচের বিক্রিয়াগুলোর জন্য অবস্থা প্রতীকযুক্ত শমিত রাসায়নিক সমীকরণ লেখ:

(i) বেরিয়াম ক্লোরাইড ও সোডিয়াম সালফেটের জলীয় দ্রবণের বিক্রিয়া

BaCl2(aq)+Na2SO4(aq)→BaSO4(s)↓+2NaCl(aq)

➡ এখানে BaSO₄ কঠিন হিসাবে অবক্ষেপিত হয়।

(ii) সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড ও হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের বিক্রিয়া

NaOH(aq)+HCl(aq)→NaCl(aq)+H2O(l)

➡ এটি একটি নিরপেক্ষীকরণ বিক্রিয়া, যেখানে লবণ (NaCl) এবং জল (H₂O) উৎপন্ন হয়।

(4) একটি পদার্থ ‘X’ সাদা রঙ করার কাজে ব্যবহৃত হয়:

(i) ‘X’ পদার্থটির নাম ও সংকেত লেখ।

পদার্থটির নাম: ক্যালসিয়াম অক্সাইড (Quick Lime)
 রাসায়নিক সংকেত: CaO

(ii) জলের সঙ্গে ‘X’ পদার্থটির বিক্রিয়া লেখ।

CaO+H2O→Ca(OH)2+তাপ

➡ এটি নিরপেক্ষীকরণ বিক্রিয়া, যেখানে ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড (Slaked Lime) উৎপন্ন হয়।

(5) কাজ 1.7 অনুসারে টেস্টটিউবে সংগৃহীত গ্যাসের পরিমাণ পার্থক্য কেন? গ্যাসটির নাম লেখ।

কাজ 1.7 অনুসারে, পানির বৈদ্যুতিক বিশ্লেষণ (Electrolysis of Water) এর সময় হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়।

2H2O→2H2+O2

➡ হাইড্রোজেন গ্যাসের পরিমাণ অক্সিজেনের দ্বিগুণ হয় কারণ বিক্রিয়ায় প্রতি ২ মোল হাইড্রোজেনের জন্য ১ মোল অক্সিজেন উৎপন্ন হয়।

গ্যাসটির নাম: হাইড্রোজেন (H₂) এবং অক্সিজেন (O₂)

(6) লোহার পিন কপার সালফেট দ্রবণে ডুবিয়ে রাখলে দ্রবণের বর্ণ পরিবর্তন হয় কেন?

Fe+CuSO4→FeSO4+Cu

➡ প্রতিক্রিয়া শেষে দ্রবণ নীল থেকে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয়।
 ➡ কারণ, FeSO₄ (আয়রন সালফেট) সবুজ রঙের হয় এবং Cu²⁺ আয়ন মুক্ত তামাতে (Cu) রূপান্তরিত হয়।

(7) দ্বি–প্রতিস্থাপন বিক্রিয়ার একটি উদাহরণ (কাজ 1.10 ছাড়া)

AgNO3(aq)+NaCl(aq)→AgCl(s)↓+NaNO3(aq)

➡ AgCl কঠিন হিসাবে অবক্ষেপিত হয়।

(8) নিচের বিক্রিয়াগুলিতে কোন পদার্থ জারিত এবং কোনটি বিজারিত তা নির্ধারণ করো:

(i) 4Na(s) + O₂(g) → 2Na₂O(s)

➡ জারিত পদার্থ: Na (সোডিয়াম)
 ➡ বিজারিত পদার্থ: O₂ (অক্সিজেন)
 ➡ ব্যাখ্যা: Na ইলেকট্রন হারিয়ে Na⁺ হয় (Oxidation), আর O₂ ইলেকট্রন গ্রহণ করে O²⁻ হয় (Reduction)।

(ii)

➡ জারিত পদার্থ: H₂ (হাইড্রোজেন) 
 ➡ বিজারিত পদার্থ: CuO (কপার অক্সাইড)
 ➡ ব্যাখ্যা: H₂ ইলেকট্রন হারিয়ে H₂O তে পরিণত হয় (Oxidation), আর CuO তামাতে পরিণত হয় (Reduction)।

বহু নির্বাচনী প্রশ্ন (MCQ) এর সমাধান

প্রশ্ন (9): কোন বিবৃতিটি সঠিক নয়?

প্রদত্ত রাসায়নিক সমীকরণ:

2PbO(s)+C(s)→2Pb(s)+CO2(g)

এই বিক্রিয়াটিতে লেড অক্সাইড (PbO) ধাতব লেড (Pb) এ রূপান্তরিত হয়েছে এবং কার্বন (C) অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO₂) উৎপন্ন করেছে। এটি একটি হ্রাস–জারণ বিক্রিয়া (Redox Reaction) যেখানে এক পদার্থ জারিত হয় এবং অন্যটি বিজারিত হয়।

প্রতিটি বিকল্প বিশ্লেষণ:

✅ (a) লেড বিজারিত হয়েছে। → ❌ ভুল, কারণ PbO বিজারিত হয়েছে এবং Pb উৎপন্ন হয়েছে।
 ✅ (b) কার্বন ডাই অক্সাইড জারিত হয়েছে। → ❌ ভুল, কারণ CO₂ কোনো ইলেকট্রন অর্জন বা দান করেনি, এটি জারিত হয়নি।
 ✅ (c) কার্বন জারিত হয়েছে। → ✔️ সঠিক, কারণ C → CO₂ রূপান্তরিত হয়েছে, যা একটি জারণ প্রক্রিয়া।
 ✅ (d) লেড অক্সাইড বিজারিত হয়েছে। → ✔️ সঠিক, কারণ PbO → Pb হ্রাস পেয়েছে।

সঠিক উত্তর:

(ii) (a) এবং (c) সঠিক নয়।

প্রশ্ন (10): Fe₂O₃ + 2Al → Al₂O₃ + 2Fe, এই বিক্রিয়াটি কোন ধরনের?

প্রদত্ত রাসায়নিক সমীকরণ:

Fe2O3+2Al→Al2O3+2Fe

এটি একটি বৈদ্যুতিক স্থানচ্যুতি বিক্রিয়া (Displacement Reaction) এবং হ্রাস–জারণ বিক্রিয়া (Redox Reaction)।

✅ Fe₂O₃ (লৌহ অক্সাইড) অক্সিজেন হারিয়ে Fe (লোহা) উৎপন্ন করেছে, অর্থাৎ এটি বিজারিত হয়েছে।
 ✅ Al (অ্যালুমিনিয়াম) অক্সিজেন গ্রহণ করে Al₂O₃ (অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড) তৈরি করেছে, অর্থাৎ এটি জারিত হয়েছে।

প্রতিটি বিকল্প বিশ্লেষণ:

❌ (a) সংযোজন বিক্রিয়া → ভুল, কারণ এখানে দুটি পদার্থ একত্রিত হয়নি, বরং প্রতিস্থাপিত হয়েছে।
 ❌ (b) দ্বি–প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া → ভুল, কারণ এখানে দুটি যৌগ পরস্পর পরস্পরের সাথে আয়ন বিনিময় করেনি।
 ❌ (c) বিয়োজন বিক্রিয়া → ভুল, কারণ এখানে কোনো বৃহৎ যৌগ ছোট ছোট যৌগে ভাঙেনি।
 ✔️ (d) প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া → সঠিক, কারণ Al, Fe₂O₃-তে Fe-কে প্রতিস্থাপন করেছে।

সঠিক উত্তর:

(d) প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া।

প্রশ্ন (11): আয়রন চূর্ণের মধ্যে লঘু হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড যোগ করলে কী ঘটে?

প্রদত্ত রাসায়নিক সমীকরণ:

Fe(s)+2HCl(aq)→FeCl2(aq)+H2(g)

যখন আয়রন (Fe) চূর্ণকে লঘু হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের (HCl) সাথে বিক্রিয়া করানো হয়, তখন আয়রন ক্লোরাইড (FeCl₂) এবং হাইড্রোজেন গ্যাস (H₂) উৎপন্ন হয়।

প্রতিটি বিকল্প বিশ্লেষণ:

✔️ (a) হাইড্রোজেন গ্যাস এবং আয়রন ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়। → সঠিক, কারণ Fe → FeCl₂ এবং H₂ গ্যাস নির্গত হয়।
 ❌ (b) ক্লোরিন গ্যাস এবং আয়রন হাইড্রোক্সাইড উৎপন্ন হয়। → ভুল, কারণ এখানে Cl₂ গ্যাস উৎপন্ন হয় না এবং Fe(OH)₂ তৈরি হয় না।
 ❌ (c) কোন বিক্রিয়া হয় না। → ভুল, কারণ Fe একটি সক্রিয় ধাতু এবং HCl-এর সাথে বিক্রিয়া করে।
 ❌ (d) আয়রনের লবণ এবং জল উৎপন্ন হয়। → ভুল, কারণ জল (H₂O) নয়, বরং হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়।

সঠিক উত্তর:

(a) হাইড্রোজেন গ্যাস এবং আয়রন ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়।

উপসংহার:

• প্রশ্ন (9): সঠিক উত্তর → (ii) (a) এবং (c) সঠিক নয়।
• প্রশ্ন (10): সঠিক উত্তর → (d) প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া।
• প্রশ্ন (11): সঠিক উত্তর → (a) হাইড্রোজেন গ্যাস এবং আয়রন ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়।

বর্ণনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন (12): শমিত রাসায়নিক সমীকরণ বলতে কী বোঝায়? সমতা বিধান করা কেন প্রয়োজন?

শমিত রাসায়নিক সমীকরণ কী?

একটি রাসায়নিক সমীকরণ (Chemical Equation) শমিত (Balanced) তখনই বলা হয় যখন প্রতিক্রিয়ার উভয় পাশে (প্রতিক্রিয়কের ও উৎপাদকের দিকে) প্রতিটি মৌলের পরমাণুর সংখ্যা সমান থাকে।

উদাহরণ:

H2+O2→H2O

এটি অশমিত সমীকরণ, কারণ প্রতিক্রিয়কের পাশে দুটি অক্সিজেন পরমাণু (O₂) আছে, কিন্তু উৎপাদকের পাশে মাত্র একটি অক্সিজেন (H₂O)।

এই সমীকরণকে শমিত করতে হলে, প্রতিটি মৌলিক পরমাণুর সংখ্যা উভয় পাশে সমান করতে হবে:

2H2+O2→2H2O

এটি এখন শমিত সমীকরণ কারণ প্রতিটি মৌলিক পরমাণুর সংখ্যা উভয় পাশে সমান।

সমতা বিধান কেন প্রয়োজন?

১. ভর সংরক্ষণ সূত্র (Law of Conservation of Mass) অনুযায়ী, কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় মোট ভর অপরিবর্তিত থাকে। তাই, প্রতিক্রিয়কের ও উৎপাদকের পারমাণবিক সংখ্যা সমান থাকা জরুরি।
 ২. রাসায়নিক সমীকরণ বোঝা সহজ হয় এবং পরিমাণগত গণনা (Stoichiometry) সঠিকভাবে করা যায়।
 ৩. কোনো মৌল বা যৌগের পরিমাণ নির্ধারণ করা সহজ হয়।

প্রশ্ন (13): নিচের বিক্রিয়াগুলোর রাসায়নিক সমীকরণ লেখ এবং সমতা বিধান করো

(a) হাইড্রোজেন + নাইট্রোজেন → অ্যামোনিয়া

অশমিত সমীকরণ:

H2+N2→NH3

শমিত সমীকরণ:

3H2+N2→2NH3

(b) হাইড্রোজেন সালফাইড + অক্সিজেন → জল + সালফার ডাই অক্সাইড

অশমিত সমীকরণ:

H2S+O2→H2O+SO2

শমিত সমীকরণ:

2H2S+3O2→2H2O+2SO2

(c) বেরিয়াম ক্লোরাইড + অ্যালুমিনিয়াম সালফেট → বেরিয়াম সালফেট + অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড

অশমিত সমীকরণ:

BaCl2+Al2(SO4)3→BaSO4+AlCl

শমিত সমীকরণ:

3BaCl2+Al2(SO4)3→3BaSO4+2AlCl

(d) পটাশিয়াম + জল → পটাশিয়াম হাইড্রোক্সাইড + হাইড্রোজেন

অশমিত সমীকরণ:

K+H2O→KOH+H2

শমিত সমীকরণ:

2K+2H2O→2KOH+H2

প্রশ্ন (14): নিম্নলিখিত সমীকরণগুলোর সমতা বিধান করো

(a)

শমিত সমীকরণ:

2HNO3+Ca(OH)2→Ca(NO3)2+2H2O

(b)

শমিত সমীকরণ:

2NaOH+H2SO4→Na2SO4+2H2O

(c)

শমিত সমীকরণ:

NaCl+AgNO3→AgCl+NaNO3

(এটি আগেই শমিত ছিল।)

(d)

শমিত সমীকরণ:

BaCl2+H2SO4→BaSO4+2HCl

প্রশ্ন (15): নিচের বিক্রিয়াগুলোর শমিত সমীকরণ লেখ

(a) ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড + কার্বন ডাই অক্সাইড → ক্যালসিয়াম কার্বনেট + জল

Ca(OH)2+CO2→CaCO3+H2O

(b) জিঙ্ক + সিলভার নাইট্রেট → জিঙ্ক নাইট্রেট + সিলভার

Zn+2AgNO3→Zn(NO3)2+2Ag

(c) অ্যালুমিনিয়াম + কপার ক্লোরাইড → অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড + কপার

2Al+3CuCl2→2AlCl3+3Cu

(d) বেরিয়াম ক্লোরাইড + পটাশিয়াম সালফেট → বেরিয়াম সালফেট + পটাশিয়াম ক্লোরাইড

BaCl2+K2SO4→BaSO4+2KCl

উপসংহার

• শমিত রাসায়নিক সমীকরণে প্রতিক্রিয়কের ও উৎপাদকের পরমাণুর সংখ্যা সমান থাকতে হবে।
• সমতা বিধান করলে ভর সংরক্ষণ সূত্র বজায় থাকে।
• প্রতিটি সমীকরণ বোঝা এবং গণনা করা সহজ হয়।

প্রশ্ন (24): অক্সিজেন গ্রহণ বা বর্জনের ভিত্তিতে জারণ ও বিজারণ ব্যাখ্যা করো, দুটি করে উদাহরণসহ।

জারণ (Oxidation) ও বিজারণ (Reduction) হল একে অপরের বিপরীত প্রক্রিয়া। রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় যদি কোনো পদার্থ অক্সিজেন গ্রহণ করে বা ইলেকট্রন হারায়, তবে সেটিকে জারণ বলে, আর যদি কোনো পদার্থ অক্সিজেন হারায় বা ইলেকট্রন গ্রহণ করে, তবে সেটিকে বিজারণ বলে।

✅ জারণ (Oxidation):

যে বিক্রিয়ায় কোনো পদার্থ অক্সিজেন গ্রহণ করে বা ইলেকট্রন বর্জন করে, তাকে জারণ বিক্রিয়া বলে।

উদাহরণ:

(১) লোহার জং ধরা

4Fe+3O2+6H2O→4Fe(OH)3

এই বিক্রিয়ায় লোহা (Fe) অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং লৌহ অক্সাইডে পরিণত হয়, যা জারণ।

(২) কপার সালফাইড গঠন

Cu+S→CuS

কপার (Cu) সালফারের সাথে বিক্রিয়া করে কপার সালফাইড (CuS) তৈরি করে, যেখানে কপার ইলেকট্রন হারিয়ে অক্সিডাইজড হয়।

✅ বিজারণ (Reduction):

যে বিক্রিয়ায় কোনো পদার্থ অক্সিজেন বর্জন করে বা ইলেকট্রন গ্রহণ করে, তাকে বিজারণ বিক্রিয়া বলে।

উদাহরণ:

(১) কপার অক্সাইডের হ্রাস (Reduction of Copper Oxide)

CuO+H2→Cu+H2O

এই বিক্রিয়ায় CuO তার অক্সিজেন পরিত্যাগ করে ধাতব কপারে পরিণত হয়, যা বিজারণ।

(২) লেড অক্সাইডের হ্রাস (Reduction of Lead Oxide)

PbO+C→Pb+CO

এই বিক্রিয়ায় PbO অক্সিজেন হারিয়ে বিশুদ্ধ লেড (Pb) গঠন করে, যা বিজারণ।

উপসংহার:

জারণ এবং বিজারণ সর্বদাই একসাথে ঘটে এবং এদের মিলিত প্রক্রিয়াকে জারণ–বিজারণ বিক্রিয়া (Redox Reaction) বলে।

প্রশ্ন (25): একটি উজ্জ্বল বাদামি মৌল ‘X’ উত্তপ্ত করলে কালো হয়ে যায়। ‘X’ এবং উৎপন্ন যৌগের নাম লেখ।

উজ্জ্বল বাদামি ধাতুটি কপার (Cu)। যখন কপারকে বায়ুতে উত্তপ্ত করা হয়, তখন এটি কালো কপার অক্সাইড (CuO) তে রূপান্তরিত হয়।

সমীকরণ:

2Cu+O2→2CuO

✅ এই বিক্রিয়াটি একটি জারণ বিক্রিয়া, কারণ কপার অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং অক্সিডাইজড হয়।

✅ এই বিক্রিয়াটি ঘরের উষ্ণতাতেও ধীরগতিতে ঘটে, যার ফলে পুরনো কপার বাসনপত্র কালো দেখায়।

প্রশ্ন (26): আয়রন নির্মিত জিনিসপত্রে রঙ করা হয় কেন?

আয়রন সহজেই বাতাসের অক্সিজেন ও আর্দ্রতার সাথে বিক্রিয়া করে এবং লৌহ অক্সাইড (Fe₂O₃.xH₂O) তৈরি করে, যা মরিচা (Rust) নামে পরিচিত।

✅ এই মরিচা আয়রনকে ধীরে ধীরে ক্ষয় করে, যার ফলে ধাতু দুর্বল হয়ে পড়ে।

মরিচা ধরার রাসায়নিক সমীকরণ:

4Fe+3O2+6H2O→4Fe(OH)3

 Fe(OH)3→Fe2O3.xH2O

রঙ করার উদ্দেশ্য:

1. অক্সিজেন ও আর্দ্রতার সংস্পর্শ থেকে আয়রনকে রক্ষা করা।
2. মরিচা ধরা প্রতিরোধ করা।
3. ধাতুর স্থায়িত্ব ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা।

✅ রঙ করার পাশাপাশি, গ্যালভানাইজেশন (দস্তার আবরণ), তেল/গ্রীস প্রলেপ, ও ধাতব প্রলেপ দেওয়ার মাধ্যমেও মরিচা প্রতিরোধ করা যায়।

প্রশ্ন (27): বোতলজাত খাবারে নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করা হয় কেন?

নাইট্রোজেন গ্যাস বোতলজাত খাবার সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস এবং এটি খাবারের গুণগত মান নষ্ট হতে দেয় না।

নাইট্রোজেন ব্যবহারের কারণ:

✅ (১) অক্সিজেনের সংস্পর্শ প্রতিরোধ করা:
 খাবারে উপস্থিত চর্বি ও তেল অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে অপক্ষয় (Rancidity) ঘটায়, যা খাবারের স্বাদ ও গন্ধ নষ্ট করে। নাইট্রোজেন গ্যাস অক্সিজেন সরিয়ে এই বিক্রিয়া প্রতিরোধ করে।

✅ (২) ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক বৃদ্ধির হার কমানো:
 নাইট্রোজেন ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে, যা খাবারকে দীর্ঘদিন ভালো রাখে।

✅ (৩) প্যাকেটের অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়িয়ে খাবার গুঁড়ো হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করা:
 নাইট্রোজেন গ্যাস প্যাকেটের ভেতরের চাপ বাড়িয়ে চিপস, বিস্কুটের মতো ভঙ্গুর খাবারকে ভাঙা থেকে রক্ষা করে।

উদাহরণ:

চিপসের প্যাকেট, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, শুকনো ফল, কফি ও দুধের গুঁড়ো সংরক্ষণে নাইট্রোজেন ব্যবহার করা হয়।

প্রশ্ন (28): নিম্নলিখিত বিষয়ের ব্যাখ্যা করো, উদাহরণসহ।

(a) অপক্ষয় (Rancidity):

✅ অপক্ষয় হল সেই প্রক্রিয়া যেখানে চর্বি বা তেলযুক্ত খাবার বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে দুর্গন্ধযুক্ত ও পচনশীল হয়ে পড়ে।

অপক্ষয়ের কারণ:

1. অক্সিজেনের সংস্পর্শ।
2. আলো ও তাপমাত্রার বৃদ্ধি।
3. ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের প্রভাব।

অপক্ষয় রোধের উপায়:

✅ (১) নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার: চিপস ও শুকনো খাবারের প্যাকেটে নাইট্রোজেন ব্যবহৃত হয়।
 ✅ (২) অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যোগ করা: ভোজ্য তেলে BHA (Butylated Hydroxyanisole) ও BHT (Butylated Hydroxytoluene) ব্যবহার করা হয়।
 ✅ (৩) খাবার সংরক্ষণ: ঠান্ডা স্থানে রাখা এবং প্লাস্টিক বা ধাতব আবরণ ব্যবহার করা।

(b) দুর্গন্ধ (Putrefaction):

✅ দুর্গন্ধ হল সেই প্রক্রিয়া যেখানে প্রোটিনসমৃদ্ধ জৈব পদার্থ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা পচে যায় এবং দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপন্ন করে।

দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে যেসব গ্যাস উৎপন্ন হয়:

1. অ্যামোনিয়া (NH₃)
2. হাইড্রোজেন সালফাইড (H₂S)
3. মিথেন (CH₄)

উদাহরণ:

1. মাংস, মাছ বা ডিম পচে দুর্গন্ধ উৎপন্ন করে।
2. মৃত প্রাণীর দেহে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়।

দুর্গন্ধ প্রতিরোধের উপায়:

✅ খাবার সংরক্ষণ করা (ফ্রিজে রাখা, লবণ বা ভিনেগার ব্যবহার করা)।
 ✅ সঠিক স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা।

Written By

Full Stack Developer and 5-Time World Record Holder, Grandmaster Bikram Sutradhar

bAstronautWay

SirBikramSutradhar on YouTube                                                               

More Story   click the link

ICSE CLASS 10 ICSE CLASS 10 BIOLOGY BASTRONAUTWAY SirBikramSutradhar Bikram Sutradhar GrandMaster Bikram Sutradhar selina biology solutions ICSE Biology Selina Solution